এ্যালেন টুরিং - কম্পিউটার জগতের অন্যতম অগ্রদূর

এ্যালেন টুরিং - কম্পিউটার জগতের অন্যতম অগ্রদূর
চিত্রঃ কম্পিউটারের নোবেল সম্মাননা - টুরিং এওয়্যার্ড
বুঝার জন্য ভাষার সৃষ্টি । প্রতিটা জীব জড় প্রাণী কিছু না কিছুর মাধ্যমে আমাদের বুঝিয়ে দেয় তার অবস্থার কথা । আমরা বিভিন্ন ভাষা ব্যবহার করে সমগ্র মানব জাতির সাথে মনের ভাব আদান প্রদান করি তেমনি প্রত্যেক অনড় বস্তুরও একটা ভাষা আছে । যেটা শ্রবণ করার ক্ষমতা আমাদের নেই শুধু আমরা অনুধাবন করতে পারি । যেমন, ব্যবহারযোগ্য টুথপ্যাস্ট প্লাজমাটিক লিকুইডের উপর যদি আপনি এসিডাইয়িত ইফেক্ট্যাড তরলের সংমিশ্রণ ঘটান তবে টুঠপ্যাস্ট আর ব্যবহারযোগ্য থাকে না । এতে টুথপ্যাস্টের বয়ান আমরা উপলব্ধি করতে পারি । টুথপ্যাস্ট বলে দেয়, "ভাইরে এমনটা করলি কেন ? এখন আমি তো আর আমি রইলাম না ।" একটা বাঘের গর্জনে আমরা অনুধাবন করতে পারি বাঘটা খুদার্থ । একটা উদ্ভিদের উপর আঘাত করলে তার শরীর থেকে একধরণের তরল নিসৃতঃ হয়(যেটা বুঝা যায়, রক্ত পরছে) । এতে আমরা বুঝতে পারি অনড় জীবটার উপর আঘাত করায় বস্তুটা খুব কষ্ট পেয়েছে ।
মানুষ সব চাইতে উন্নত প্রাণী । তাই আমাদের রয়েছে বিশ্ব ব্যাপী প্রায় সাড়ে তিন হাজারেরও বেশী ভাষা । যার মাধ্যমে আমরা কমুনিক্যাট হয় । তেমনি কম্পিউটার নামক যন্ত্রটিরও বুঝার কয়েকটা ভাষা আছে । যার মাধ্যমে সে জেনে নেয় আমি তাকে কি বুঝাতে চাচ্ছি । এই ভাষাগুলোকে "প্রোগ্রাম" বা বাংলায় "শিড়নথি" বলা হয় ।  আর যারা এই ভাষা বুঝে এবং তার ভাষাই তাকে প্রেষণা প্রদান করে কাজ চালায় সেটাকে বলে "প্রোগ্রামিং" ।
চিত্রঃ এ্যালেন টুরিং
এই ব্যক্তি দিক বিজয়ী একজন প্রোগ্রামার । তিনি পৃথিবীর বুকে প্রথম তাত্ত্বিক কম্পিউটার প্রকৌশল এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্ত্বা (Artificial Intelligence) এর উৎকৃষ্ট বেসিস সৃষ্টি করেন । এই ব্যক্তি একাধারে একজন অগ্রণী কম্পিউটার প্রকৌশলী, গণিতজ্ঞ, যুক্তিবিদ, দার্শনিক, গোপন সংকেত বিশেষজ্ঞ, গাণিতিক জীববিজ্ঞানী এবং ম্যারাথন দৌড়বিদ ছিলেন ।
 বিজ্ঞানের প্রত্যেকটা শাখায় এই ব্যক্তির কিঞ্চিৎ সামান্য হলেও হাত আছে । তিনি ক্রিপ্টলজীতে (Cryptology) অসামান্য উন্নয়নের কাজ করেন ।
চিত্রঃ শেকভিল পার্কে  তার স্মরণীয় মূর্তি



১৯৩৬ সালে তিনি তার জীবনের সবচেয়ে বৃহৎ গবেষণা পত্রটি প্রকাশ করেন । যার নাম ছিলো ""On Computable Numbers, with an Application to the Entscheidungsproblem"-এই পত্রে তিনি তার আবিষ্কার "টুরিং মেশিন" (Turing Machine) এর কথা উল্লেখ করেন । যার মাধ্যমে গণনা এবং এলগরিদমের ধারণার লিখিত-মৌখিক থেকে যান্ত্রিক পদ্ধতি প্রচলন করেন । এলগরিদমের উপর তার প্রতিভা ছিলো আকাশ চুমি ।

চিত্রঃ অমর প্রোগ্রামার এলেন
 তিনি তার তৈরী মেশিনের দ্বারা প্রমাণ করেন যে, "সাধারণ এলগরিদমের মাধ্যমে "এ্যানসিডোংস প্রোব্লেম" এর গাণিতিক জটিলতা সমাধান সম্ভব নয় । এর সমাধানের বিকল্প হিসেবে তিনি সামগ্রীক ভাবে এলগরিদম ভিক্তিক যন্ত্র মাধ্যমে সম্ভব বলে উল্লেখ করেন " । অর্থ্যাৎ, টুরিং মেশিন কখনো হল্ট করবে কিনা তা অসংজ্ঞায়িত । তিনি "হল্টিং প্রব্লেম" নেপথ্যে এ্যানসিডোংস প্রোব্লেম  এর সুস্থিত অসম্ভাভ্য প্রমাণ দেখান  । এই তত্ত্বটি চার্চ-টুরিং থিসিস  নামে পরিচিত ।

এন্সিডোংস প্রোব্লেম (Entscheidungsproblem) : ১৯২৮ সালে ডেভিড হেলবার্ট কর্তৃক এই চ্যানেঞ্জ প্রযোজিত হয় । যার মূল বিষয়বস্তু হল সিদ্ধান্ত গ্রহণে হিসাবিয় সিম্বল মেনিপুলেশন এবং গাণিতিক সঠিক মান নির্ধারণে এর এলগরিদম ভিক্তিক জটিলতা ।  যা ডেভিড হেলবার্ট ১৯২৮ সালে আন্তর্জাতিক কনভেন্সে অসমাধান যোগ্য সমস্যা বলে চিহ্নিত করেন ।( বাংলায় যেমন বলা হয়, ডিম আগে না মুরগি আগে । )



হল্টিং প্রোব্লেম (Halting Problem) : এটি হলো এমন এক ধরণের সমস্যা যেখানে প্রোগ্রাম ইনফিনিট লোপ এবং ব্রেক আপ বা হল্ট অসংজ্ঞায়িত হয়ে থাকে । যেমন,
সুডোকোড প্রোগ্রামঃ
                         while (true) continue ;
             //এটি একটি আন হল্ট প্রোগ্রাম অর্থ্যাৎ, ইনফিনিট লোপ ব্যবহার করা হয়েছে । উদাহরণ ,
                         print "Hello world!";
            //এটি একটি হল্ট প্রোগ্রাম ।
চিত্রঃ বেলেচি পার্কে এ্যালেন টুরিং এর লক্ষ ওয়েলস টাইসের স্তম্ভ

এই ব্যক্তি কম্পিউটার জগতে অসামান্য কৃতিত্ত রাখেন । ১৯৪৮ সালে তিনি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনিভার্সিটিতে ম্যাক্স নিউম্যানের কম্পিউটিং ল্যাবরেটরিতে যোগ দেন যেখানে তিনি "ম্যাঞ্চেস্টার কম্পিউটার" তৈরিতে সাহায্য করেন। এসময় তিনি গাণিতিক জীববিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পরে তিনি মর্ফোজেনেসিসের রাসায়নিক ভিত্তির উপর গবেষণাপত্র লিখেন এবং স্পন্দিত রাসায়নিক বিক্রিয়া সম্বন্ধে ধারণা পোষণ করেন যা প্রথম লক্ষ্য করা হয় ১৯৬০ সালে।
চিত্রঃ এ্যালেন টুরিং স্মৃতি স্তম্ভ
এরপর তিনি বায়োলজীর উপর উঠে পরে লাগেন । "The Chemical Basis of Morphogenesis"  নামে তিনি ১৯৫২ একটি গবেষণা পত্র প্রকাশ করেন । তিনি "মর্ফোজেনেসিস"-বায়োলজীক্যাল অরগানিজমের উপর আগ্রহী ছিলেন । গবেষণার তাগিদে তিনি সমকামিতার বিভিন্ন পরীক্ষায় কাজ চালান । তার গবেষণা থেকেই সমকামী মন মানষিকতার সৃষ্টি হয়ে যায় । যার কারণে ১৯৫২ সালে টুরিংকে সমকামিতার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সে সময়ে যুক্তরাজ্যে সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হত ।
চিত্রঃ অবদানের ফ্লো

 ১৯৫৪ সালে আইনানুযায়ী তাকে এস্ট্রোজেন (Estrogen) ইঞ্জেকশন দেয়া হয় । টিউরিং ১৯৫৪ সালে ৪২ বছর বয়সে মারা যান । ২০০৯ সালে ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন টুরিংকে যে ক্ষতিকর চিকিৎসায় বাধ্য করা হয় তার জন্য দাপ্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

চিত্রঃ এ্যালেন টুরিং
পুরস্কার ও সম্মাননাঃ
  •  ২০১৩ সালে রাণী এলিজাবেথ তাঁকে মরণোত্তর ক্ষমা প্রদান করেন। 
  • ১৯৯১ সালে তাকে "রয়্যাল সোসাইটির ফেলো" নির্বাচিত করা হয় ।
  • "অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার"- সম্মাননা ।
তার নামে বহু প্রতিষ্ঠান-পুরস্কারের নামকরণ করা হয় । যথা,
  • গুড-টুরিং ফ্রিকুয়েন্সি ইস্টিমেশন
  • টুরিং কমপ্লিটনেস
  • টুরিং ডিগ্রী
  • টুরিং ইন্সটিটিউট
  • টুরিং লেকচার
  • টুরিং মেশিন এক্সাম্পলস
  • টুরিং পেটার্ন্স
  • টুরিং রিডাক্সন
  • টুরিং সুইচ



আর সর্বোচ্চ যে কম্পিউটার ভিক্তিক সম্মানটা রয়েছে সেটা তার নামেই । সেটার নাম "টিউরিং এওয়্যার্ড" ।
চিত্রঃ এ্যালেন টুরিং  ট্রপি

এই সম্মানটি কম্পিউটারের নোবেল বলা হয় । এটি এন্ড টি বেল লেবরেটরীর প্রসিডিউর অরিয়েন্টেন্ড প্রোগ্রাম (C Programming) এর জনক ডেনিস রিচও এই সম্মাননা পেয়েছিলেন । নিচে এখনো পর্যন্ত বিজয়ীদের তালিকা দেয়া হলঃ


বিজয়ীদের তালিকাঃ

১৯৬৬
অ্যালান পারলিস
অগ্রসর প্রোগ্রামিং কৌশলাদি এবং কম্পাইলার তৈরির ক্ষেত্রে প্রভাবের জন্য ।

১৯৬৭
মরিস ভিনসেন্ট উইলকিস
প্রফেসর উইল্‌ক্‌স এডস্যাক কম্পিউটারের পরিকল্পক ও নির্মাতা হিসেবে খ্যাত। এই কম্পিউটারেই প্রথম একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম সংরক্ষণ করা হয়। ১৯৪৯ সালে নির্মিত কম্পিউটারটিতে মার্কারি ডিলে লাইন মেমরি ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়াও উইল্‌ক্‌স হুইলার ও গিলের সাথে একত্রে ১৯৫১ সালে Preparation of Programs for Electronic Digital Computers শীর্ষক একটি বই লেখেন। এই বইটিতেই প্রথম প্রোগ্রাম লাইব্রেরির ধারণা প্রথম উপস্থাপন করা হয়।

১৯৬৮
রিচার্ড হ্যামিং
সাংখ্যিক পদ্ধতি, স্বয়ংক্রিয় কোডিং ব্যবস্থা, এবং ত্রুটি-শনাক্তকারী ও ত্রুটি-নিবারণকারী কোডের উপর তাঁর কাজের জন্য। (হ্যামিং কোড)

১৯৬৯
মার্ভিন মিন্সকি
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আবিষ্কারের জন্য ।

১৯৭০
জেমস উইল্কিন্সন
উচ্চ গতিসম্পন্ন আধুনিক কম্পিউটারের সাঙ্খিক হিসাব পর্যবেক্ষণের জন্য । লিনিয়ার এলজাবরা এবং "ব্যাকওয়ার্ড" ত্রুটি বিশ্লেষণে জন্য ।

১৯৭১
জন ম্যাকার্থি
আর্টিফিশিয়াল ইন্ট্যালিজেন্ট" এর বর্তমান অবস্থাননের উপর ভিক্তি করে যুক্তি যুক্ত তথ্য পরিবেশনের জন্য ।

১৯৭২
এট্‌সখার ডেইক্‌স্ট্রা
এট্‌সখার ডেইক্‌স্ট্রা ১৯৫০-এর দশকে উচ্চস্তরের প্রোগ্রামিং ভাষা অ্যালগল নির্মাণে একজন প্রধান অবদানকারী ছিলেন। অ্যালগল ভাষাটি পরিচ্ছন্নতা এবং গাণিতিক বিধিবদ্ধতার একটি মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়। ডেইকস্ট্রা প্রোগ্রামিং ভাষাসমূহের বিজ্ঞান ও শিল্পের একজন প্রধান প্রবক্তা; তিনি প্রোগ্রামিং ভাষাসমূহের গঠন, উপস্থাপন এবং বাস্তবায়ন সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পরিসর বৃদ্ধি করেছেন। প্রোগ্রামিং ভাষার ক্ষেত্রে তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লেখেন, যাতে তাত্ত্বিক গবেষণাপত্র থেকে শুরু করে সাধারণ ম্যানুয়াল, বড় রচনা, এবং দার্শনিক চিন্তা স্থান পেয়েছে ।

১৯৭৩
চার্লস বাখমান
ডেটাবেজ প্রযুক্তিতে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ।

১৯৭৪
ডোনাল্ড কানুথ
অ্যালগরিদমসমূহের বিশ্লেষণ এবং প্রোগ্রামিং ভাষার ডিজাইনে ব্যাপক অবদান রাখার জন্য, বিশেষ করে দি আর্ট অভ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিরোনামের বইয়ের সিরিজটি লেখার জন্য।

এছাড়াও যারা এ পদক পেয়েছেনঃ
  • ১৯৭৫ সালে   অ্যালেন নেওয়েল এবং হার্বার্ট সাইমন, 
  • ১৯৭৬ সালে মাইকেল র‍্যাবিন এবং ডানা স্টুয়ার্ট স্কট, 
  • ১৯৭৭ সালে জন বাকাস,  
  • ১৯৭৮ সালে রবার্ট বব ফ্লয়েড ,  
  • ১৯৭৯ সালে কেনেথ আইভার্সন , 
  • ১৯৮০ সালে টোনি হোর , 
  • ১৯৮১ সালে এডগার কড , 
  • ১৯৮২ সালে স্টিফেন আর্থার কুক ,  
  • ১৯৮৩ সালে কেন টম্পসন এবং ডেনিস রিচি , 
  • ১৯৮৪ সালে নিকলাউস ভির্ট ,  
  • ১৯৮৫ সালে রিচার্ড কার্প ,  
  • ১৯৮৬ সালে জন এডওয়ার্ড হপক্রফট এবং রবার্ট টারজান ,  
  • ১৯৮৭  সালে জন কোক , 
  • ১৯৮৮ সালে আইভান এডওয়ার্ড সাদারল্যান্ড ,  
  • ১৯৮৯ সালে উইলিয়াম মর্টন কাহান ,  
  • ১৯৯০ সালে ফার্নান্দো হোসে কোর্বাতো , 
  • ১৯৯১ সালে রবিন মিলনার , 
  • ১৯৯২ বাটলার ল্যাম্পসন ,  
  • ১৯৯৩ জুরিস হার্টম্যানিস এবং রিচার্ড এডউইন স্টার্নস ,  
  • ১৯৯৪ সালে এডওয়ার্ড আলবার্ট এবং রাজ রেড্ডি ,  
  • ১৯৯৫ সালে ম্যানুয়েল ব্লাম ,  
  • ১৯৯৬ সালে আমির নিউলি ,  
  • ১৯৯৭ ডগলাস কার্ল এঙ্গেলবার্ট ,  
  • ১৯৯৮ জিম গ্রে ,  
  • ১৯৯৯ ফ্রেড ব্রুক্‌স ,  
  • ২০০০ অ্যান্ড্রু ইয়াও ,  
  • ২০০১ উলাহ্‌-ইয়োহান ডাল এবং ক্রিস্টেন নিগার্ড ,  
  • ২০০২ সালে রন রিভেস্ট, আদি শামির এবং লেনার্ড এডলম্যান ,  
  • ২০০৩ সালে এলান কে ,  
  • ২০০৪ সালে ভিন্টন সার্ফ এবং রবার্ট কান ,  
  • ২০০৫ সালে পিটার নাউর , 
  • ২০০৬ সালে ফ্রান্সিস এলিজাবেথ অ্যালেন ,  
  • ২০০৭ সালে এডমুন্ড এম. ক্লার্ক , আর্নেস্ট অ্যালেন এমারসন এবং  যোসেফ সিফাকিস ,   
  • ২০০৮ সালে বারবারা লিসকভ ,  
  • ২০০৯ সালে  চার্লস পি. থ্যাকার ,  
  • ২০১০ সালে লেইসলী গ্যাব্রিয়েল ভ্যালিয়েন্ট ,  
  • ২০১১ সালে   জুডে পার্ল , 
  • ২০১২ সালে   সিলভিও মিকালি  ,   শফি গোল্ডওয়েসার
  • ২০১৪ সালে মিশেল স্টনবার্গার (আধুনিক ড্যাটাবেসের জন্য)
  • ২০১৫ সালে মার্টিন ই.হ্যালম্যান এবং হুইথফিল্ড ডিফফি (আধুনিক ক্রিপ্টোলজির জন্য)
চিত্রঃ এলেন টুনিং ফাডার অব কম্পিউটার সাইন্স
১৯১২ সালের ২৩ শে জুনে এই ব্যক্তি লন্ডনের মাইদাভলে জন্মগ্রহণ করেন । ব্রিটিশ ভারতের বিহার এবং উড়িষ্যা প্রদেশে তাদের ছিলো আদি নিবাস ।





ডেক্সটপের মাই কম্পিউটার আইকন কি মিস হয়েছে !!

ডেক্সটপের মাই কম্পিউটার আইকন কি মিস হয়েছে !!


উন্ডোজের অনেক সাধারণ সাধারণ ফিচার আছে যেগুলো আমাদের অনেক সময় বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে । আজকে এরি মধ্যে একটি বিষয়ের সমাধান তোলে ধরবো ।
উন্ডোজ যখন আমরা নতুন ভাবে সেটআপ করি তখন উন্ডোজের আইকন নিয়ে একটি বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয় , প্রাথমিক (Defult) ভাবে রিসাইক্যাল বিন (Recycle Bin) আইকনটাই দেখা যায় । অনেক সময় মাই কম্পিউটার (My Computer) আইকনটি না দেখতে পেয়ে আমরা হতাশ হয়ে পরি । আমার হার্ড ডিক্সেই ঢুকতে না পারলে কি আর লেখার আছে ! নতুন কম্পিউটার চালকদের জন্য এই সমস্যা অনেক যন্ত্রণাদায়ক । এই আইকনটি আনার সহজ কয়েকটি উপায় আচ্ছে । নিচে কয়েকটি পদ্ধতি উল্লেখ করলাম ।



উপায়-১ঃ

সবচাইতে সহজ উপায় একটি ছোট্ট সফ্ট‌ওয়্যার । এই সফ্ট‌ওয়্যারটিতে ডবল ক্লিক করে প্রয়োজনীয় গুলো শুধু মার্ক করে দিলেই হয়ে যাবে । প্রক্রিয়াটি নিচে চিত্রের মাধ্যমে লক্ষ্য করুন ।
প্রথমে নিচের লিংক থেকে জীপ (.zip) ফাইলটি ডাউনলোড করে নিন ।


১. .zip ফাইলটির উপর মাউস রেখে রাইট বাটনে ক্লিক করুন । এবং এক্সট্রেট (Extract) করুন ।


২. এরপর ফোল্ডারটির মধ্যে দুটি ফাইল দেখতে পাবেন । একটি "Desktop Icon Settings" নামে লেখা থাকবে এবং অন্যটি "আমাকে পড়ুন.txt" এর নামে । যদি আপনি ব্লগের এই লেখাটি না পরে ফাইলটি ডাউনলোড করে থাকেন তবে "আমাকে পড়ুন" টেক্সট ফাইলটি অবশ্যই পড়বেন । এখন, "Desktop Icon Settings" ফাইলটিতে ডবল ক্লিক করুন । 




৩. এখান থেকে শুধুমাত্র মার্ক   চিহ্নতে ক্লিক করে বাটন চাপলেই আপনি কাংখিত ডেক্সটপ আইকনটি পেতে পারেন।


উপরের পদ্ধতিটি ছিলো সফ্‌টওয়্যারের মাধ্যমে সমাধান । এখন চলুন সাধারণভাবে (Manually) এর সমাধানের উপায় ।

উপায়-২ঃ

প্রথমে আপনার ডেক্সটপের যেকোন জায়গায় মাউসের ডান বাটন (Right Button) এ ক্লিক করুন । সেখান থেকে সবার নিচে থাকা অপশন "Personalize" এ ক্লিক করুন ।


তারপর যে উন্ডোটি আসবে সেখান থেকে বামপাশে থাকা "Themes" অপশনটি নির্বাচন (Select) করুন । তার ঠিক ডান দিকে কয়েকটি ছোট অপশন থাকবে । যেটার একটি "Desktop Icon Settings" । সেখানে ক্লিক করলেও প্রথমটির মত একটি মার্ক- আনমার্ক করার ডায়ালক উন্ডো বক্স আসবে । তার পরেতো কি করতে হবে তা উপায়-১ এ বলে দেয়ায় হল । 



উপায়-৩ঃ

আরো সহজ ভাবে, শুধু মাত্র উন্ডো বাটনে এবং সাথে বাটন একসাথে চাপলেও মাই কম্পিউটারে প্রবেশ করা যায় ।

সহজ তিনটি পদ্ধতিতে ডেক্সটপের আইকন আনা (Bring) এবং উঠানোর পদ্ধতি ব্যাখ্যা করলাম । আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে । যদি ভালো লেগেই থাকে অবশ্যই অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে আমাদের উৎসাহিত করার অনুরুধ রইল ।

Note: লেখাটি বেসিক কম্পিউটার শিক্ষার্থীদের এবং যারা জানেনা ঠিক সে সব পাঠকদের উদ্দ্যেশে লেখা ।





ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস এবং বিভিন্ন স্টোরেজ মেমরি

ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস এবং বিভিন্ন স্টোরেজ মেমরি
ন্টারনেট ব্যবহারকারী খুব কম সংখ্যক মানুষই আছে যারা ক্লাউড (Cloud) কম্পিউটিং সার্ভিস সম্পর্কে জানে না । এই ক্লাউড শব্দটির আভিধানিক অর্থ মেঘ । আকাশে বৃষ্টির পূর্বাভাষ হলেই মেঘের একটা ছায়া আমরা লক্ষ্য করি । মেঘের কথা মনে আসলেই ছোট কালে বৃষ্টির প্রাক কালে এদিক ওদিক উন্মুক্ত আনন্দের এক ছুটাছুটির কথা মনে পরে যায় । যায় হোক শৈশবের কথা এখানে আলোচ্য না । আলোচ্য বিষয় ঐ মেঘ । মেঘ বিষয়ে আমরা একটা বিষয় পরিষ্কার যে, মেঘ আকাশে ঝুলন্ত (Hanging) অবস্থায় থেকে এদিক ওদিক ছুটাছুটি করে । তাই ক্লাউড সার্ভিস নামটা শুনেই আমরা ধরে নিতে পারি , এটা এমনি এক ধরণের সেবা হতে পারে যেটা ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে অর্থাৎ যেটা অস্পর্শীয় । ঠিক তাই । ইন্টারনেটের এই সেবাটি আপনার ইলেক্ট্রনিক সকল ড্যাটাকে সংরক্ষণ করে । এতো সব আপনার প্রাইভেট সম্পদ রাখা অথচ আপনি তা ধরে ছুঁয়ে দেখতেও পারছেন না । তবে এটাই আপনার সকল ফাইল নিরাপদে রাখার উত্তম পদ্ধতি । কারণ, যদি আপনি কোন গোপনীয় জিনিস আপনার বাড়িতে রাখেন সেটার সর্বশেষ নিরাপত্তা চলে যায় একটি তালার উপর । আর এখন একটি লোহার তালা বা স্টিলের তালা চোরের কাছে কিছুই না । অস্পর্শক ইন্টারনেটে যে চোর কম তা নয় । এই বিশাল সেবা প্ররদানের জন্য ইন্টারনেটের চোর গুলো আরো ভয়ংকর । তবে কম্পিউটারের ভাষায় এই চোর গুলোকে হ্যাকার বলে । ইন্টারনেট ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিসে আপনার ফাইলগুলো গোপন রাখতে সার্ভিস প্রোভাইডাররা ২৪/৭ নিরাপত্তা গবেষকদের নিয়োজিত রাখে ।

যাতে কোন চোর তাদের সার্ভারে রাখা আপনার সম্পদ নষ্ট করতে না পারে । তারা আপনার ফাইল সংরক্ষণের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিবে । ইন্টারনেট আইন মেনেই তারা এসব প্রোজেক্ট হাতে নেয় । আর কথা নাবারিয়ে চলে যায় মূল প্রসঙ্গে । যখন আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় ফাইল কম্পিউটারের হার্ড ডিক্সে রাখি তখন ফাইল নষ্ট হওয়ার একটা আশংকা থাকে । কারণ, কি জানি কোন কারণে হার্ড ডিক্স ক্রাশ খেয়ে যায় বা কম্পিউটারে সমস্যা হয়ে যায় । তাহলে আমার সকল গুরুত্তপূর্ণ ফাইল শেষ ! ঠিক এর বিপরীতে ইন্টারনেট ক্লাউড সিস্টেম আপনার সকল তথ্য ও উপাত্তকে নিরাপত্তার সহিত বিভিন্ন মেয়াদে তাদের কাছে জমা রাখার প্রতিশ্রুতি দেয় । এখন পর্যন্ত যে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম সেটা ছিলো ইন্টারনেট ক্লাউড কম্পিটিং নিয়ে । এছাড়াও কম্পিউটারে ডিজিটাল ড্যাটা সংরক্ষণের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে । যেগুলোকে অফলাইন ফাইল সিস্টেম বলা যায় । অফলাইন ফাইল সিস্টেমকে ঐতিহ্যবাহী (Traditional) বা লোকাল স্টোরেজ সিস্টেম (Local Storage System)ও বলা হয় । তাহলে দেখে নিই ইন্টারনেট বিহীন ফাইল সিস্টেমে কি কি সেবা রয়েছে ।

i). এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভ (External Hard Drive)


এই সেবাটি একটি ঐটিহ্যবাহী পদ্ধতি । যা আপনার কম্পিউটারে ইন্সটল ফাইলগুলোকে যেকোন সময় ইন্টারনেট বিহীন ভাবে দেখা, লেখা এবং স্বতন্ত্র প্রবেশের সুযোগ দেয় । এটা যেকোন একটি কম্পিউটারে প্রাথমিক ভাবেই সংযুক্ত থাকে । এটা স্থানান্তর করতে হলে আপনাকে কম্পিউটারের আবরণ খুলে সেখান থেকে অপসারণ করতে হবে । তাই এটি একটু কষ্ট সাধ্য । এই পদ্ধতিতে আপনি কোন অপারেটিং সিস্টেমকে কম্পিউটার ফাইল ম্যানেজিং এর জন্য ব্যবহার করতে পারবেন । তবে এটি নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকে । এটি সর্বোচ্চ ৩ ট্যারাবাইট ড্যাটা স্টোর করতে পারে ।
এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভ দুই ধরণের আছে । একটি হল, ডেক্সটপ হার্ড ড্রাইভ (Desktop External Hard drive ) এবং অন্যটি পোর্টেবল হার্ড ড্রাইভ (Portable External Hard drive) ।
ডেক্সটপ হার্ড ড্রাইভ গুলো ডেক্সটপ কম্পিউটারের জন্য ব্যবহার করা হয় । যা পরিবহণ অনেক কষ্ট সাধ্য । এগুলো আকারে ৩.৫ ইঞ্চি দীর্ঘ হয় । আর পোর্টেবল হার্ড ড্রাইভ গুলো প্রধানত ল্যাপটপের জন্য ব্যবহার করা হয় । এগুলো আকারে ২.৫ ইঞ্চি দীর্ঘ হয়ে থাকে । এটার প্রধান সুবিধা হচ্ছে এটি সহজে পরিবহণযোগ্য । ডেক্সটপের হার্ড ডিক্সগুলো ল্যাপটপের হার্ড ডিক্স থেকে সস্তায় পাওয়া যায় এবং তা ল্যাপটপের হার্ড ডিক্সের চাইতে তার সক্রিয়তা বেশি ।

ii). সলিড স্টেট ড্রাইভ (Solid State Drive) (SSD)

এই ড্রাইভ ম্যাগনেটিক ফিল্ডের মাধ্যমে অফলাইনে আপনার সম্পূর্ণ সিস্টেম এবং ফাইল সিস্টেমকে সংরক্ষণ করে । এটি সহজেই স্থান পরিবর্তন করা যায় । এটির স্থায়িত্ব ও প্রবেশ সুবিধা দ্রুতই । কিন্তু এর মূল্য অন্যান্যদের তুলনায় বেশি । এটি ৬৪ গিগাবাইট থেকে ২৫৬ গিগাবাইট ড্যাটা সংরক্ষণ করতে পারে ।

iii). নেটওয়ার্ক এটাচ্‌জড্‌ স্টোরেজ (Network Attached Storage) (NAS)

সকল ব্যবহারকারীরা একটি ফাইল স্টোরেজের সাথে সংযুক্ত থাকে । যেমন, আপনার পরিবারে একটি ফাইল হোস্টার থাকবে । যেটার মাধ্যমে আপনার পরিবারের সকল কম্পিউটার কানেক্ট থাকবে । অর্থাৎ, একটি হার্ড ডিক্সের মাধ্যমে অনেকগুলো কম্পিউটার এটাচ্জ‌ড্‌ থাকবে । এটার নিরাপত্তা ভালো এবং ফাইল শেয়ারিং ক্ষমতা উন্নত । এই ড্রাইভের মেশিন অনেক গরম হয়ে যায় । তাই এর জন্য ফ্যান ব্যবহার করা হয় ।

iv).ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ (USB Pen Drive Or Flash Drive)

ইউনিভার্সাল সিরিয়াল বাস (Universal Serial Bus) কে সংক্ষেপে ইউএসবি বলা হয় । কম্পিউটারে ইউএসবি পোর্টের মাধ্যমে যে সকল ড্রাইভ ফাইল স্টোরেজের জন্য ব্যবহার করা হয় তাদেরকে ফ্ল্যাশ ড্রাইভ বলা হয় । সবগুলোর চাইতে এই ড্রাইভের পরিবহণ ক্ষমতা সহজ । সাধারণত, একটি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ ৪ থেকে ৬৪ গিগাবাইট ড্যাটা স্টোর করতে পারে । তবে নষ্ট হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে ।

v). অপটিক্যাল ডিক্স ড্রাইভ (Optical Disk Drive) (CD/ DVD)


একটি অপটিক্যাল ড্রাইভ মানে দ্রুত ও স্বল্প মূল্যে ফাইল স্টোর সুবিধা সম্পন্ন ড্রাইভ । যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কারো কাছে ফাইল আদান প্রদানের স্বার্থে ব্যবহার করা হয় । এই ড্রাইভে ফাইল নিরাপত্তাহীন । যার হাতে থাকে সেই ঐ ফাইলগুলোকে সহজেই এক্সেস নিতে পারে । এই ড্রাইভকে বলা যায় প্রায় স্বল্প সময়ের জন্য ফাইল রক্ষা করতে পারে । কারণ, এটি ভঙ্গুর অর্থাৎ, একটু আঘাত পেলেই ভেঙে যেতে পারে । একটি সিডি তে সাধারণত ৬৫০ থেকে ৯০০ মেগাবাইট ফাইল রাখা যায় এবং ডিভিডি তে সাধারণত ৪.৭ থেকে ১৭.০৮ গিগাবাইট ফাইল স্টোর করা যায় ।



আজকের লেখাটি আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে । যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মন্তব্য জানাবেন এবং মুক্ত ভাবে শেয়ার করে অন্যদের জানাতে পারেন । আপনাদের সহজে বুঝানোর চেষ্টায় আমাদের প্রধান উদ্দ্যেশ্য । ধন্যবাদ সবাইকে ...।