শব্দ (Sound) হল এক ধরণের শক্তি । যেটাকে পর-নির্ভর শক্তি (Dependence Energy)ও বলা যায় । শব্দ তরঙ্গ একটি মাধ্যম ছাড়া প্রবাহিত (Flow) হতে পারে না । যেমন, আমরা প্রতিনিয়ত শব্দের ব্যবহার করি বায়ু মাধ্যমে (Air Medium)। এছাড়াও, শব্দ কঠিন মাধ্যম (Solid) এবং তরল (Liquid) মাধ্যমে প্রবাহিত হতে পারে । শব্দ তরঙ্গ (Frequency) আকারে প্রবাহিত হয় । তরঙ্গ হল, একটি মাধ্যমের কণা (Particle) গুলোকে সংকুচন (Contraction)এবং প্রসারন (Expansion) এর মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হয় । নিচের ছবিটি লক্ষ্য করলে আপনি তরঙ্গ সম্পর্কে সঠিক ভাবে বুঝতে পারবেন ।
শব্দ পরিমাপের একক (Standard) হল , হার্জ (Hertz) । শব্দ সাধারণত বায়ু মাধ্যমে প্রতি মিনিটে ১২.৮ মাইল গতিতে প্রবাহিত হয় । প্রতি ১ সেকেন্ডে প্রবাহিত হয় ৩৪৩.৪ মিটার । তাহলে শব্দ ১ কিলোমিটার যেতে কতটুকু সময় লাগবে ? নিচের চিত্র থেকে জেনে নিন ।
চিত্রঃ প্রতি সেকেন্ডে শব্দের গতিবেগ হিসাব
আপনি একটি অনুষ্ঠানে আছেন । যেখানে মাইকে আপনি গান গাইছেন । আর ঠিক এক কিলো দূরে আপনার বন্ধু আপনার গান শুনতে পাচ্ছে । তাহলে শব্দের হিসাব থেকে বুঝায় যাচ্ছে যে, আপনার গানের আওয়াজ আপনার বন্ধুর কানে গিয়ে পৌছাতে প্রায় ৩ সেকেন্ড সময় নিচ্ছে । অর্থাৎ, তিন সেকেন্ডের আগের কথা আপনার বন্ধু তিন সেকেন্ড পরে শুনতে পাবে । বিশ্বাস নাহলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন । অনুষ্ঠানে আপনার পরিচিত কাউকে ফোন দিন । আর ঠিক এক কিলো দূরে দাঁড়িয়ে আপনি ফোনে কথা বলে দেখুন । আশ্বর্য হলেও এটাই ঘটবে । আর আমি ফোনের কথা বলেছি কারণ, শব্দের গতিবেগ থেকে ল্যান্ডফোন টাওয়ার সিগন্যালের গতিবেগ ঢের বেশি ।
শব্দের এই তারতম্য শুধু এখানেই না ! যখন আকাশে বিদ্যুৎ চমকায় তখনো আমরা উপলব্ধি করতে পারি । শব্দের চাইতে আলোর গতি অনেক বেশি তাই, মেঘের স্তর (The Stratosphere) থেকে আলোর ঝলকানি (Lightning) আমরা আগে অনুভব করতে পারি ।
এখনকার দিনে মানুষ এতটাই প্রযুক্তি নির্ভর যে, বইয়ের পাতার স্থির অক্ষরগুলো পড়তে সবার মন করে না । যদি এর ব্যাখ্যা ভিডিও ফুটেজ আকারে দেখতে পারতাম তাহলে কত সহজেই না বুঝা যেতো ? মিথ্যা কিন্তু নয় ! কোন জিনিস চাক্ষুস দর্শনে বুঝে শুনে দেখাটাই দ্রুত আয়ত্বের বড় অংশীদার । এতে আমাদের ব্রেইন সরাসরি ভিডিও পর্দার অস্থির (স্থির নয়) পর্দার উপর নিবেশিত হয় । কারণ, একটি ভিডিওর পর্দা যেমন আমাদের চোখের দৃষ্টি আকর্ষন করে তেমনি ভিডিওর শব্দ আমাদের শ্রবণেন্দ্রিয় কর্ণকেও মনোযোগে প্রযোজিত করে । এখন আলোচনায় আসি ভিডিও বা "অস্থির চিত্র" মানে কি ? ছবি (Picture) :
একটি ছবি (Picture) মানে একটি স্থির গ্রাফিক্স । যেটি কখনো নড়বে না । আপনি যে কোন মুহূর্তেই ছবিটির দিকে তাকাননা কেন, ছবিটি আপনাকে চেয়েই যাবে । ছবিটি দেয়ালে যতদিন থাকবে আপনি মরে গেলেও আপনার উত্তরসূরি নাতি পতির দিকে সেই এক অবাক লোকনে চেয়েই রবে । চাইলেও চোখের আড়াল হতে পারবেন না । না এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই । এটা আমরা সবাই জানি ।
শব্দ তরঙ্গ (Sound):
একটি মিউজিক (Music) বা সাউন্ড (Sound) মানে দৃশ্যহীন একটি সুরের মূর্ছনা (The Music of silence) । এই অদৃশ্যমান অনুভূতি আপনাকে হাঁসাবে কাঁদাবে , আপনাকে বিশ্রাম দিবে এমন কি আপনার অবচেতন (Unconsciousness) করে তোলবে । আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে এই "শব্দ" শব্দটি ওতপ্রোত ভাবে জড়িত । শব্দহীনতা একজন মানুষের বিকলাঙ্গতা (Sound Disorder) ।
উপরের দুটি পয়েন্টকে দেখুন । দুটি পয়েন্টই একটি স্বতন্ত্রতা (Individuality) রয়েছে । অর্থাৎ, একটি হল নির্বাক এবং অন্যটি সবাক । সম্পর্কের দিক বিবেচনা করলে বলা যায় শব্দ এবং ছবি দুটি দুই-মেরুর অর্থ বহন করে । এই দুটি পয়েন্টকে এক করার জন্য যে মাধ্যম (Medium) প্রচলিত সেটাই ভিডিওচিত্র । আরো একটু পরিষ্কারের করি ।
আমরা জানি গ্রাফিক্সের মূল অর্থই হল, স্থির চিত্র । আর অনেকগুলো স্থির চিত্র মিলেই একটি বায়স্কোপ (Moving Picture) [যা স্থির নয়] । এবং তার সাথে শব্দ সহযোগে তৈরী হয় একটি পূর্ণাঙ্গ ভিডিওচিত্র । ভিডিওচিত্র ক্যামেরায় ধারণ করা হয় । একটি সাধারণ মানসমপন্ন (Standard) ক্যামেরা প্রতি সেকেন্ডে সর্বোচ্চ ৩০টি ছবি ধারণ করতে পারে । ভিডিওর ভাষায় প্রতি সেকেন্ডের প্রতিটি ছবিকে ফ্রেম (Frame) বলে । এক সেকেন্ডে ক্যামেরা যতগুলো ফ্রেম ধারণ (Capture) করতে পারে তাকে বলে ফ্রেম রেট (Frame Rate) এবং প্রতি সেকেন্ডের ফ্রেমকে সংক্ষেপে fps (Frame Per Second) বলে । একটি ভিডিওর সম্পদ (Properties) এ গেলেই আপনি ভিডিওটির ফ্রেম সংখ্যা দেখতে পাবেন । নিচের ছবিতে লক্ষ্য করুন ।
চিত্রঃ ভিডিও প্রোপার্টিজ্
তাহলে আমরা আরেকটি জিনিস বুঝলাম যে, একটি ভিডিও মানে অনেকগুলো ছবি (Frames) এবং শব্দ সহযোগে সৃষ্ট মাধ্যম । যা আমাদের একই সাথে দেখতে এবং শুনতে দেয় । কম্পিউটার গ্রাফিক্সে ভিডিওকে অনেক চমকপ্রদ ভাবে উপস্থাপন করা যায় । যা আমাদের বিনোদন এবং শিক্ষায় অনেক অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করছে ।
ভিডিও আকার (Size) :
চিত্রঃ একটি ভিডিওর সাইজ
ভিডিও একটি পর্দার উপর আপতিত হয় এবং আমরা সেই পর্দাকেই অবলোকন করি । যেহেতু একটি পর্দার প্রতিচ্ছবিতে আমরা ভিডিওটি দেখি তাই বলা যায় ভিডিওর একটি উচ্চতা এবং একটি প্রশস্থতা আছে । ঠিক তাই । তার এই উচ্চতা বা প্রশস্ততার একক পিক্সেল (Pixel) । মনিটরের পর্দার ক্ষুদ্র একক ঘরকে পিক্সেল বলে । এই পিক্সেল চতুর্ভূজ আকারের । অর্থাৎ, চারটি সমান বাহু দিয়ে পিক্সেল গঠিত । তাহলে এটাও বুঝা যায় যে, অনেকগুলো চতুর্ভূজের সমন্বয়ে একটি মনিটরের পর্দা । উলম্ব (Vertical) এবং অনুভূমিক (Horizontal) বরাবর মোট যতগুলো পিক্সেল বিদ্যমান সেগুলোর মোট হিসাবই হল , একটি ভিডিওর সাইজ । এরি অনুপাতকে রেজল্যুশন (Resolution) বলা হয় । রেজল্যুশন এবং সাইজের মধ্যে একটু পার্থক্য আছে । একটি ভিডিওর শুধু সাইজ নয় একটি অনুপাতও (Proportion) আছে । উপরের ছবিতে দেখতেই পাচ্ছেন । পার্থক্যটা হচ্ছে, রেজল্যুশন হিসাব করা হয় উলম্ব এবং অনুভূমিক বরাবর পিক্সেলের মোট গড়ের উপর । একটি আদর্শ ভিডিওতে সবসময় উলম্ব বরাবর পিক্সেল সংখ্যা কম থাকে । ভিডিও অনুপাত মাপার গাণিতিক একটি সূত্র আছে । সূত্রটি হলঃ
4n : 3n [n=Integer Number]
সচরাচর রেজল্যুশনের হিসাবটা ধরা হয় তার উলম্ব বরাবর যতগুলো পিক্সেল আছে তার উপর। যেমন ধরুন, একটি ভিডিওর সাইজ :
Horizontally : 1920 pixel
Vertically : 1080 pixel
তাহলে এর রেজল্যুশন বলা যাবে 1080 পিক্সেল বা সংক্ষেপে 1080p । স্ট্যান্ডার্ড তথ্য অনুযায়ী ভার্টিক্যাল বরাবর সর্বোনিম্ন ৭২০টি পিক্সেল থাকলে তাকে উচ্চ মাত্রার (HD=High Defination) ভিডিও বলা হয় ।
এছাড়াও ভিডিও নিয়ে আরো অনেক আলোচ্চ বিষয় আছে । যেগুলো ভিডিও এডিটিং চাপ্টারে বিস্তৃত আলোচনা করা হবে ।
ধন্যবাদ সবাইকে ।
পৃথিবীময় প্রযুক্তির ভীরে আমরা আমাদের স্থান দখল করতে হবে । না হলে, দেশতো পিছাবেই সাথে কর্মসংস্থানের অভাবে আমাদের দিশেহারা হতে হবে । সরকারি চাকরির দিক চেয়ে রইলে না হবে দেশ প্রেম না হবে নিজ-প্রেম । তাই, মুক্ত পেশা (Freelance) এর বিকল্প নেই ।
গড় পরিসংখ্যানে দেখা গেছে একজন দক্ষ মাল্টিমিডিয়া ইঞ্জিনিয়ার (এনিমেটর) প্রতি বছর৪৮,০০০ থেকে ৭২,০০০ ডলার ($) পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে ।
নিচে বার্ষিক পরিসংখ্যান গ্রাফ দেখানো হলঃ
আপনি চাইলেও এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে আর্থিক উপার্জন করতে পারবেন । তবে হ্যা, এ জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রস্তুত হতে হবে । একজন দক্ষ প্রোগ্রামারের টার্গেট থাকে মাইক্রোসফ্ট , গুগল কিংবা ফেইসবুকে । আর একজন এনিমেটরের টার্গেট থাকে ওয়াল্ট ডিজনি (Walt Disney), ড্রিমওয়ার্ক (DreamWorks), নিকেলডিওন (Nickelodeon) ইত্যাদি ।
চিত্রঃ জনপ্রিয় এনিমেশন কোম্পানি
একজন ভালো মানের এনিমেটর হতে হলে আপনাকে অনেক কিছুই শিখতে হবে । এখনকার জামানায় আপনি ঘরে বসেই এসব কিছু জানা সম্ভব । সামান্য কিছু ট্রিক্স্ জানা থাকলেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন একজন মানসম্পন্ন মাল্টিমিডিয়া ইঞ্জিনিয়ার (Multimedia Engineer) । যেমন, গুগল মামাকে প্রশ্ন করার ধরণ, ইংরেজিতে অভিজ্ঞতা etc ।
নিচে বর্তমানের সবচাইতে জনপ্রিয় কয়েকটি দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক এনিমেশন তৈরীর সফটওয়্যার তোলে ধরলাম । আমি কথা দিচ্ছি এগুলো থেকে যেকোন একটি ভালো করে আয়ত্ব করতে পারলেই আপনি মোটামুটি একজন মান সম্পন্ন এনিমেটর হতে পারবেন ।
Software Name
Software Type
Engine Support
Platform
Level
Download
Autodesk Maya
$1,470/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Professional
3D Studio Max
$1,470/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Professional
Houdini
$1,995/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Professional
Lightwave 3D
$995/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Professional
Blender
Free
2D & 3D
Windows OS & Mac OS
Professional
Daz3D Studio
$70/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Professional
Modo
$1,799/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Professional
Cinema 4D
$3,510/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Advance
Fusion 9 Studio
$299/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Professional
SketchUp
$695/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Professional
ZBrush
$423/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Intermediate
Poser
$209.99/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Advance
Rhino 3D
$1,695/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Professional
After Effect
$239.88/year
2D & 3D
Windows(x64) & Mac OS
Professional
বিশাল মূল্যের পণ্য এগুলো । তাই আমি মনে করি ব্লেন্ডার দিয়ে কাজ করাটাই সবচাইতে ভালো । তবে এর মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় ও হলিউডে বেশি ব্যবহৃত সফ্টওয়্যার অটোডেক্সের মায়া ও ম্যাক্স ।
চিত্রঃ অটোডেক্স মায়া
তাহলে, আজই শুরু করুন । ইউটিউবে বিষয় ভিত্তিক বিভিন্ন কীওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করুন । আগে নিজের প্রশ্নগুলোকে একত্র করুন । তারপরে দেখুন কোনটা আগে আপনার মাথায় আঘাত করছে । এরপর শুরু করুন সার্চ ইঞ্জিনের কাজ । আমি নিশ্চিত যে, আপনি যদি ভালো করে সার্চ ইঞ্জিনকে বুঝাতে পারেন তাহলে সার্চ ইঞ্জিনও আপনাকে আপনার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌছে দিবে ।
ধন্যবাদ সবাইকে ।
স্পাইডারম্যান ছবিটি দেখার পর আমার মনে হল, "ইস ! আমার এমন কিছু সুপার নেচার্যাল (Super Natural) পাওয়ার যদি থাকতো ? তাহলে কত মজাইনা হত !" এটা শুধু আমার না প্রত্যেকেরই হবে । কার না ভালো লাগবে যদি নিজের কাছে কিছু অতিপ্রাকৃতিক শক্তি থাকে ।
এসব কিছু তোলার প্রধান কারণ হল, এনিমেশন জিনিসটি ব্যাখ্যা করার জন্য । এনিমেশন হল সেই মাধ্যম যেটা আপনার সেই আকাংখাকে পূরণ করে । যদিও সেটা বাস্তবে না । তবে আপনি ইলেকট্রিক পর্দায় দেখাতে পারবেন , আপনি আকাশে উড়ছেন, আপনি হাত দিয়ে অদ্ভুত একটি জাদু করছেন ।
এনিমেশন হল, গ্রাফিক্সেরই একটি অংশ ।
একটি স্থির ছবিকে বলা হয় চিত্র (Picture), আর অনেকগুলো চিত্রকে একত্র করলে তাকে সিনেমা (Film) বা শুদ্ধবাংলায় চলচ্চিত্র (Moving Picture) বলা হয় । আর যদি সে চলচ্চিত্রটি হয় অবাস্তব কল্পনা থেকে নেয়া তখন সেটাকে বলা যায় এনিমেশন (Animation) । এনিমেশন শব্দটি এনিমেটিং (Animating) শব্দ থেকে এসেছে । যার অর্থ উজ্জীবিত (Enlivening) করা । আর এনিমেটিং শব্দটি এসেছে ল্যাটিন এনিমেশিও (Animātiō) শব্দ থেকে । যার অর্থ "প্রাণবন্ত" ।
বর্তমানে এনিমেশনের ব্যবহার এতই বেড়েছে যে, প্রতিটি কাজ ডিজিটাল ভাবে উপস্থাপনে এনিমেশন ছাড়া হয়ই না । তাই এখন এনিমেশন শিখেও আপনি আপনার ক্যারিয়ার গড়তে পারেন । আমাদের দেশে এর ব্যবহার তথাপি বৃদ্ধি না পেলেও বহিঃবিশ্বে এনিমেশনের ব্যবহার উল্লেখ্যযোগ্য । বর্তমানে এনিমেশনের মধ্যে প্রধানত দুই ধরণের এনিমেশন লক্ষ্যনীয় ।
একটি হল, দ্বিমাত্রিক এনিমেশন (2D Animation) এবং অন্যটি ত্রিমাত্রিক এনিমেশন (3D Animation) । দ্বিমাত্রিক এনিমেশন বলতে দুটি তল দ্বারা সীমাবদ্ধ । যেমন,
চিত্রঃ দ্বিমাত্রিক মিনা কার্টুন
ইউনিসেফ (UNICEF) নিবেদিত জনপ্রিয় কার্টুন সিরিজ মিনা কার্টুন ।
ত্রিমাত্রিক এনিমেশন বলতে তিনটি তল দিয়ে যে এনিমেশন তৈরী করা হয় । আমাদের দেশে একটি জনপ্রিয় ত্রিমাত্রিক কার্টুন সিরিজ "মন্টু মিয়ার অভিযান" (The adventure of Montu Miah) এবং এটি একটি ত্রিমাত্রিক কার্টুন এনিমেশন ।
এছাড়াও বিদেশী হাজার হাজার কার্টুন এনিমেশন ছবি এবং সিরিজ আছে যেগুলো আমাদের অনন্য বিনোদন দেয় । তার মধ্যে, টম এন্ড জেরি (Tom and Jerry) , বার্নার্ড বেয়ার (Bernard Bear) , বেন টেন (Ben10), মটু পাটলু (Motu Patlu) ইত্যাদি ইত্যাদি ।
(এনিমেশন বিষয়ে আরো লেখা আসছে...)
গ্রাফিক্স শব্দের কোন প্রচলিত বাংলা বিশেষ্য পদ নেই । তাই একে বুঝার জন্য বলা যেতে পারে যে, "কোন ভাবার্থের বা অর্থশীল ঘটনার চিত্রকর্ম ।" গ্রাফিক্স শব্দটি একটি ইংরেজি শব্দ । যা এসেছে গ্রীক শব্দ "গ্রাফিকস" (Graphikos) শব্দ থেকে । যেটার গ্রীক অর্থ হল, "আঁকা-আঁকির সাথে সম্পর্কযুক্ত ।" যখন কেউ কোন বস্তুদ্বারা অন্য একটি বস্তুর উপর খুদায় করে অথবা তার উপর বিভিন্ন ভাবে দাগ টেনে কোন কিছু আঁকার চেষ্টা করে তখন সেটাকে গ্রাফিক্স বলা যেতে পারে ।
গ্রাফিক্স এবং কম্পিউটার গ্রাফিক্সঃ
গ্রাফিক্স এবং কম্পিউটার গ্রাফিক্স একই শ্রেণীর দুটি রূপ । গ্রাফিক্স হল, সকল ডিজিটাল (Digital) এবং নন-ডিজিটাল (Non-Digital) ভিজ্যুয়াল কনটেন্টের সমন্বয় এবং কম্পিউটার গ্রাফিক্স সেটাই যেটা শুধুমাত্র ডিজিটাল ভাবে ভিজ্যুয়াল কনটেন্টকে কে সংরক্ষণ করে । মোট কথায়, কম্পিউটার গ্রাফিক্স , গ্রাফিক্সেরি একটি উপশাখা ।
উপরের ছবিটির ভিতরে বাম থেকে প্রথম ছবিটি খ্রীষ্টপূর্ব ২,৬০০,০০০ বছর পূর্বে প্রাচীন মানুষের (Prehistoric Art) সৃষ্ট কর্ম । যেটার ফসিল ফ্রান্সে পাওয়া গিয়েছে । এটার নাম চাউভ্যাট ক্যাভ (Chauvet Cave) । এবং ডান দিকের ছবিটি আধুনিক চিত্র-শিল্প ।
কম্পিউটার গ্রাফিক্সঃ
কম্পিউটারের ভাষায় গ্রাফিক্স মানে, অনেকগুলো পিক্সেল (Pixel) এর সমন্বয় । আর পিক্সেল হল কম্পিউটার পর্দার একক (Unit) ঘর । অর্থাৎ, অনেকগুলো পিক্সেল মিলে একটি পর্দা (Screen) ।
দৈনন্দিন জীবনে ব্যবসাহী এবং ব্যক্তিগত ভাবে কম্পিউটার গ্রাফিক্সের বিপুল ব্যবহার চলছে । কম্পিউটার গ্রাফিক্স কে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয় । একটি হল রাস্টার বেইজ গ্রাফিক্স এবং অন্যটি হল, ভেক্টর বেইজ গ্রাফিক্স । রাস্টার গ্রাফিক্সে মূলত ব্যবহার করা হয় ওয়েব এবং কম্পিউটার ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশনের জন্য । অপর পক্ষে, ভেক্টর গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয় প্রিন্ট (Print) এর কাজের জন্য । ভেক্টর গ্রাফিক্সে কোন সময় আপনার ডকুমেন্টের কোয়ালিটি নষ্ট করে না । যে কোন সময় আপনার ইমেইজ ডকুমেন্টের সাইজ বাড়িয়ে কমিয়ে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন । প্রেসে প্রিন্ট যখন করা হয় তখন প্রিন্টের সুবিধার্থে বিভিন্ন স্কেলে মূল ডকুমেন্টকে সাজিয়ে নিতে হয় । কোয়ালিটি নষ্ট হলে প্রিন্ট ফেঁকাসে হয়ে যায় । তাই ভেক্টর গ্রাফিক্সের মূল কাজই হল, প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য । তবে, ভেক্টর গ্রাফিক্সে কাজ করলেও আপনি সেটাকে ওয়েবের জন্য প্রস্তুত করতে পারবেন ।
রাস্টার গ্রাফিক্সকে বিটম্যাপ ইমেইজও বলা হয় । বর্তমানে গ্রাফিক্সের যে হারে চাহিদা বৃদ্ধিপাচ্ছে তাতে নতুন কর্ম সংস্থান এবং উদ্ভাবনী ব্যক্তিগত প্রকল্প গুলো বিশেষ করে আমাদের মত উন্নয়ণশীল দেশগুলোতে বিশেষ ভাবে প্রভাব ফেলছে । একজন দক্ষ (Professional) গ্রাফিক্স ডিজাইনার প্রতিবছর গড়ে ৪১,০০০ $ (ডলার) পর্যন্ত রোজগার করতে পারে ।
চিত্রঃ হাংঝুতে পরিচিত হওয়া অস্ট্রেলিয়ান বন্ধু প্যান পাল মর্লির সাথে
শিক্ষানবিশ জ্যাকঃ
১৯৬৪ সালে গণচীনে জন্ম নেয়া এক অদম্য ব্যক্তি "জ্যাক মা" । নিজ মাতৃভাষার সংক্ষিপ্ত গণ্ডী পেড়িয়ে যাওয়ার জন্য তিনি ছোট কালেই অদম্য এক ফ্রীসার্ভিস প্রদান করেন । ইংরেজি ভাষা শিক্ষার জন্য তিনি বাড়ি থেকে ৪০ মিনিটের পথপাড়ি দিয়ে প্রতিদিন স্থানীয় হাংযু নামক হোটেলে যেতেন বিদেশি পর্যটকেদের সাথে কথা বলার জন্য । ইংরেজি শিক্ষার উদ্বিগ্নতা তাকে বহুদূর নিয়ে গেছে । ইংরেজি কথোপকথন শুনার জন্য রেডিওতে কান পেতে থাকতে । তরুণ জ্যাক মা ইংরেজি ভাষা রপ্ত করার উদ্দেশ্যে ঐ হোটেলে চাকরি নেন । এ এমনি একটি চাকরি যার কোন আর্থিক মূল্য নেই । অর্থাৎ, বিনা পয়সায় তিনি পর্যটকদের পথ প্রদর্শন করাতেন । একটাই উদ্দেশ্য বিদেশীদের সাথে কথোপকথন । সেখানে তিনি টানা ৯ বছর কাজ করেন । ছোট এক ছেলে পথ প্রদর্শন করাচ্ছে কে না তার উপর মায়া না জন্মাবে । এর ফলে তার কিছু বিদেশি বন্ধুও জোটলো । অকৃতকার্য জ্যাকঃ
জীবনের শুরু থেকেই ব্যর্থতা তার পিছু নিয়েছে । প্রাথমিক স্কুল শুরুতেই দুইবার অকৃতকার্য হন বালক জ্যাক । মাধ্যমিক শিক্ষায় তিনি তিনিবার ফেল করেন । কলেজ জীবনের শুরুতে তিনি তিন বছর লাগিয়েছেন শুধু ভর্তির উপযুক্ত প্রমাণ করতে । গণিত পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর ছিলো ১ । এর পর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য তিনি ১০ বার আবেদন করেন । কিন্তু এতেও তিনি অকৃতকার্য হোন । এতো ব্যর্থতার পর তিনি স্থির করেন দেশীয় কোন কোম্পানিতে চাকরি করবেন । ছোট বড় মিলিয়ে তিনি প্রায় ৩০টি কোম্পানিতে চাকরির আবেদন করেন । কিন্তু দেশেও তার নাজেহাল অবস্থা । কোন কোম্পানিতেই তাকে চাকরি দেয়নি । তাতেও তিনি ক্ষান্ত হননি । শেষমেশ আর উপায় না দেখে চায়না ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্ট "কেএফসি" তে চাকরির জন্য আবেদন করেন । কিন্তু তার ভাগ্যটা এতই খারাপ যে , ২৪ জন পরীক্ষার্থী থেকে ২৩ জন উত্তীর্ণ হন একমাত্র জ্যাক মা হয়ে যান অকৃতকার্য । এমন ভাগ্য যে মানুষ তাকে দেখে শুধুই হাসতো । এমনি আরো একটি চাকরির আবেদনে ৫জন পরীক্ষার্থী থেকে ৪ জন কৃতকার্য করা হয় । শুধু বাদ পরে যায় জ্যাক । এমনি বেহাল অবস্থা এই ব্যক্তির । এই দুটি ব্যর্থতা তাকে খুবি আক্রান্ত করে । অসফলতা থেকে সাফল্যের মুখঃ
চিত্রঃ জ্যাক মা
একটি অবিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি তৎকালীন ১২$ এর বিনিময়ে ইংরেজি প্রশিক্ষক হিসেবে চাকরি করেন । এরপর তিনি রপ্তানিমুখী ব্যবসার জন্য ইংরেজি অনুবাদ কেন্দ্র চালু করেন । ১৯৯৪ সালে তিনি প্রথম ইন্টারনেট নামের সাথে পরিচিত হন । ১৯৯৫ সালের প্রথম দিকে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং সেখানে এক বন্ধুর সহযোগিতায় ইন্টারনেটের প্রথম পাঠ নেন । সে সময় তিনি ইন্টারনেটে "বিয়ার" লিখে সার্চ দিয়ে যে সমস্ত তথ্য পান, তার মধ্যে বিভিন্ন দেশের ওয়েবসাইটের অবদান থাকলেও নিজ দেশ থেকে কোনো অবদান তার চোখে পড়েনি । এমনকি তার নিজের দেশের তথ্য ইন্টারনেটে সার্চ দিয়েও না পেয়ে বেশ মনঃক্ষুণ্ণ হন জ্যাক । পরে এক বন্ধুর সহযোগিতায় একটি নিজদেশীয় সাধারণ ওয়েবসাইট তৈরি করেন । ওয়েবসাইটটি প্রকাশ করার মাত্র ঘণ্টা পাঁচেকের মধ্যে তিনি বিভিন্ন জনের কাছ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পান । এটিই মূলত তার ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসা করার প্রথম অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে তার জন্য ।
যারা স্বপ্ন দেখতে জানে তারা স্বপ্ন বুনতেও চিনে । আমরা স্বপ্ন দেখি কিন্তু বুনতে গিয়েই খেতে হয় হুঁচটের উপর হুঁচট । প্রথমবারের হুঁচটে বিধস্ত হয়ে যায় আমাদের মন । যখন এই হুঁচট বাববার হতে থাকে তখন সম্পূর্ণ মানষিকতায় বিগরে যায় । আর কিছু করার মন মানষিকতা বাকি থাকে না । কিন্তু এমন কিছু মানুষ আছে যারা বার বার নয় বহু বার শুধু অকৃতকার্যই হয়েছে । সফলতার মুখও তারা কখনই দেখেনি । দেখেনি সফলতার উল্লাসিত মুহূর্ত । শুধু বুনেছে স্বপ্ন গড়ার অলৌকিক কিছু উত্তেজনা । আজ আমি আপনাকে এমন একজনের সাথে পরিচিত করাতে যাচ্ছি যার কাছে বিফলতা মাথা নুয়িয়ে দিয়েছে । তার নাম "জ্যাক মা" ।
১৯৯৫ সালে তার স্ত্রী জ্যাং ইং ও কিছু বন্ধু বান্ধবের সহযোগিতায় প্রায় বিশ হাজার ইউএস ডলার সংগ্রহ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের একজন বন্ধুর সহযোগিতায় " নামের একটি কোম্পানি তৈরি করেন । তাদের মূলত কাজ ছিল চীনের বিভিন্ন কোম্পানির জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে দেয়া । ইন্টারনেট বিষয়ে কাজের উদ্দেশ্যে মাঠে নামেন জ্যাক । সবচাইতে আশ্বর্যের বিষয় হল, তিনি ঐ সময় ওয়েব প্রোগ্রামিং বিষয়ে কিছুই বুঝতেন না । মাত্র তিন বছরের মধ্যে সেই কোম্পানি প্রায় আট লক্ষ ইউএস ডলারের মতো মুনাফা লাভ করে । এই পরিমাণটা সেই সময়ের তুলনায় অনেক বিশাল ছিল । ১৯৯৮ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি "চাইনা ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রনিক কমার্স সেন্টার" এর প্রধান হয়ে কাজ করেন ।
এর পরি পৃথিবীর যুগান্তরকারী ইকোমার্স সাইট আলীবাবা গ্রুপের আইডিয়া বাস্তবায়নের পথ উন্মোচন করেন ।
আলীবাবা গ্রুপ প্রতিস্থার জন্য তিনি তার ১৭ জন বন্ধুকে নিমন্ত্রণ জানান । কিন্তু ১জন ছাড়া বাকি সবাই তার এই আইডিয়াকে "স্টুপিড আইডিয়া" আখ্যায়িত করেন । এতে তিনি ভেঙে পরেননি বরং স্বনির্ভর হয়েই যাত্রা শুরুর চিন্তা করেন । পরিশেষে ১৯৯৯ সালে গড়ে তোলেন তার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান আলীবাবা ডট কম । চীন দেশের ভিতরে প্রথম প্রথম ব্যবসা করলেও পরে আন্তর্জাতিক ভাবে রূপ দেন পদে পদে ব্যর্থ এই উদ্দ্যেগী । ১২$ দিয়ে প্রথম কাজ শুরু করে আজ ৪৭.৮ বিলিয়ন ডলারের মালিক জ্যাক মা ।
শিক্ষণীয় উক্তিঃ
১ ।
যখন আমার বয়স ছিলো ১২ বছর । তখন আমি একবার পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিলাম এবং আমার প্রায় মরার মত অবস্থা হয়ে গিয়েছিলাম কারণ, পুকুরের পানি এতই গভীর যে আমি যতটুকু গভীর চিন্তা করি তার থেকেও গভীর ।।
২।
তুমি যদি চেষ্টাই না কর তবে তোমার জন্য সুযোগ আছে কিনা বুঝবে কি করে ?
৩।
হাল ছেড়ে দিও না । আজকে কঠিন দিন যাবে, আগামী কালের দিনটা খারাপ যাবে । কিন্তু আগামী কালের পরের দিনটা তুমার জন্য উজ্জ্বল থাকবে ।
৪।
শান্তির বাণী সবসময় কঠিন ও জটিল হয় ।
৫।
আমি মনে করি তরুণরা তার আগের প্রজন্ম থেকে উন্নত হয় । আপনার এই কথাটি ভালো না লাগেও পারে । আমার বাবা আমাকে বলেছিলো, "জ্যাক তুমি আমার মত হতে পারবে না ।" কিন্তু আমি তার থেকে উত্তম । আমার বাবা তার বাবার থেকে উত্তম ছিলো এবং আমার ছেলে মেয়েরা আমার থেকে উত্তম হবে ।
৬।
জীবনের প্রথম দিকে আমি শুধু মাত্র বেঁচে থাকার চেষ্টা করতাম । প্রথম ৩ বছরে আমাদের অ্যায় ছিলো শূণ্য । আমার এখনো মনে আছে, যতবার আমি রেস্টুরেন্টে গিয়ে বিল প্রদান করতে চেয়েছি , রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার আমাকে বলতেন বিল পে করা হয়ে গেছে । এবং বলতেন, " জনাব মা, আমি আলীবাবা প্রতিষ্ঠানের একজন ক্রেতা । সেখান থেকে আমি অনেক টাকা আয় করেছি । আমি জানি এটা আপনি জানেননা তাই আমি বিলটা নিজেই পে করেদিয়েছি । "